
আওয়ামী লীগের পক্ষে রাজধানীতে লিফলেট বিতরণ করে চাকরি খোয়ালেন শিক্ষা ক্যাডারের আলোচিত কর্মকর্তা মুকিব মিয়া। ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মুকিব ৩১তম বিসিএসের শিক্ষা ক্যাডারে ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
৫ আগস্টের পর পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর থেকে তাকে লালমনিরহাট পাটগ্রাম উপজেলার জসমুদ্দিন কাজী আব্দুল গণি কলেজে পদায়ন করা হয়। সেখানে যোগদান না করেই ঢাকায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন।
জানা যায়, গত ২ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের পক্ষে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে লিফলেট বিতরণ করেন। এই ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র সমালোচনা শুরু হয় এবং বিষয়টি সরকারের উচ্চ মহলের নজরে আসে।
বরখাস্তের আদেশে মুকিব মিয়ার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি ওই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।
এর আগে, গত বছরের ৫ আগস্টের পর মুকিব মিয়া তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কঠোর সমালোচনা করে একাধিক পোস্ট দেন। তার পোস্টগুলোতে বিদ্বেষপূর্ণ ও আপত্তিকর মন্তব্য দেখা যায়।
এসব মন্তব্যের জেরে গত ২০ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার ৩(খ) ধারা অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা করা হয়। একইসঙ্গে, তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। এর মধ্যেই তিনি আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নেন এবং পরবর্তীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে গ্রেপ্তার হন।
সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯-এর ২৫(১) ধারা অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মকর্তা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত থাকতে অথবা কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারেন না।
অভিযোগ রয়েছে, মুকিব মিয়া এই বিধি লঙ্ঘন করে নিয়মিতভাবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতেন এবং লিফলেট বিতরণের ছবিসহ সংশ্লিষ্ট সংবাদ নিজের ফেসবুক ওয়ালে প্রকাশ করতেন। শেষ পর্যন্ত, বিধি লঙ্ঘনের দায়ে তাকে চাকরি হারাতে হলো।