
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের শ্রীনগরে শনিবার সকালে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, যা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। শ্রীনগর বিমানবন্দরের কাছে বসবাসকারী একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্যমতে, তারা প্রথমে একটি জেট বিমানের মতো গর্জন
শুনতে পান এবং এরপরই ঘটে বিস্ফোরণ। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, জেট শব্দ শোনার ঠিক ১৩ সেকেন্ড পরেই বিস্ফোরণটি ঘটে। আরেকজন বলেন, স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ২০ মিনিটে জেটের শব্দ শোনার
পর তারা বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজ শুনেছেন এবং পরে ধোঁয়ার শিখা দেখতে পান। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, শহরের বিদ্যুৎ চলে যায় এবং পুরো এলাকা অন্ধকারে ডুবে যায়।
বিবিসির একজন সংবাদদাতা জানিয়েছেন, ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে তিনি দুটি শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দে ঘুম থেকে জেগে ওঠেন। এরপর প্রায় ২০ মিনিটের ব্যবধানে আরও তিনটি বিস্ফোরণ ঘটে।
প্রথম দুটি বিস্ফোরণে তার হোটেল কেঁপে ওঠে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তবে এসব বিস্ফোরণের প্রকৃত উৎস এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এরই মধ্যে শুক্রবার রাতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে সামরিক উত্তেজনা দেখা দেয়।
ভারতীয় পক্ষ থেকে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির নূর খান বিমানঘাঁটি, সরকোটের রফিকি বিমানঘাঁটি এবং চকওয়ালের মোরাইদ ঘাঁটিতে মিসাইল হামলা চালানো হয় বলে জানা গেছে। হামলার পর পাকিস্তান দাবি করে,
তারা নূর খান ঘাঁটির ওপর হামলা প্রতিহত করেছে। স্থানীয় সময় রাত আড়াইটার দিকে ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডিতে বিশাল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় এবং একই সময়ে নূর খান ঘাঁটিতে ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান মধ্যরাতে ‘অপারেশন বুনিয়ান উন মারসুস’ পরিচালনা করে। এই অভিযানে ভারত এবং ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বেশ কিছু সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানার দাবি করা হয়। পাকিস্তান জানায়, ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের বিয়াসে অবস্থিত একটি ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণ কেন্দ্র ধ্বংস করা হয়েছে। তবে ভারত এই দাবির ব্যাপারে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি।
ভারত মূলত রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে ব্রহ্মস সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করে, যা সর্বোচ্চ ৮০০ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে সক্ষম। এই ক্ষেপণাস্ত্র সাবমেরিন, জাহাজ ও যুদ্ধবিমানসহ বিভিন্ন সামরিক যান থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য। অন্যদিকে, পাকিস্তান ফাতাহ-১ নামক মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ভারতীয় সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে বলে আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে। তবে শ্রীনগরের বিস্ফোরণের বিষয়ে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।