
বেসরকারি স্কুল-কলেজে কর্মরত পৌনে চার লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর এপ্রিলের বেতনের অপেক্ষা শেষ হতে চলেছে। অবশেষে বেতনের প্রস্তাব তৈরির কার্যক্রম শেষ করার পথে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (ইএমআইএস) সেল।
শনিবার (১৭ মে) ইএমআইএস সেলের একটি সূত্র জানিয়েছে, সেলের প্রধান সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট খন্দকার আজিজুর রহমান ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সাতদিন হাসপাতালে ছিলেন। বর্তমানে তিনি বাসায় রয়েছেন। বাসায় থেকেও শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন নিয়ে কাজ করছেন। আগামীকাল রোববার (১৮ মে) এপ্রিলের বেতনের প্রস্তাব মাউশির প্রশাসন শাখায় পাঠানো হতে পারে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে ইএমআইএস সেলের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের সেল প্রধান অসুস্থা থাকার পরও বাসা থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন নিয়ে কাজ করছেন। আগামীকাল মাউশির প্রশাসন শাখায় এপ্রিলের বেতনের প্রস্তাব পাঠানো হবে। পরবর্তীতে প্রশাসন শাখা থেকে এটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাজেট শাখায় পাঠানো হবে।’
ইএমআইএস সেলের প্রধান ছাড়া অন্য কোনো কর্মকর্তা বেতন প্রস্তুতের কাজ করতে পারেন না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ইএমআইএস সেলের একেক কর্মকর্তা একেক অঞ্চলের তথ্য যাচাই করে সেটি প্রধানের কাছে পাঠান। যেহেতু বিষয়টি স্পর্শকাতর, অনিয়ম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেহেতু চূড়ান্ত তথ্য ইনপুটের কাজ সেলের প্রধান সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট একাই করে থাকেন।’
মাউশির একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামীকাল রোববার ইএমআইএস সেল থেকে এপ্রিলের বেতনের প্রস্তাব পাওয়ার পর পরই সেটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। শিক্ষক-কর্মচারীরা চলতি সপ্তাহে না কি আগামী সপ্তাহে এপ্রিলের বেতন পাবেন সেটি মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের ওপর নির্ভর করবে।
জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পান। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে ছাড় হয়। এই অর্থ তুলতে শিক্ষকদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হতো।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়। পরবর্তী সময়ে গত ১ জানুয়ারি ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতার সরকারি অংশের টাকা পেয়েছেন।
দ্বিতীয় ধাপে ৬৭ হাজার, তৃতীয় ধাপে ৮৪ হাজার এবং চতুর্থ ধাপে ৮ হাজার ২০০ এর অধিক শিক্ষক-কর্মচারী ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসের বেতন পেয়েছেন। তবে তারা এখনো এপ্রিল মাসের বেতন-ভাতা পাননি। আগামীকাল রোববার তাদের এপ্রিল মাসের বেতনের প্রস্তাব ইএমআইএস সেল থেকে মাউশিতে পাঠানো হতে পারে।