
ভারত সরকার অবশেষে কঠোর অবস্থানে গেছে। দীর্ঘদিন সহনশীলতা দেখানোর পর, সম্প্রতি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে একের পর এক গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার রাহড়া থানার পুলিশ সম্প্রতি তিনজন বাংলাদেশি আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। ১৪ অক্টোবর ‘বিদেশি’ হিসেবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন—খুলনার মজনু গাজী, কামাল শেখ ও লস্করপাড়া, নিউটাউন, কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া মোহাম্মদ মেহেদী হাসান ওরফে মিলন।
সোমবার (১৯ মে) বারাকপুর মহকুমা আদালত তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। ভারতীয় গণমাধ্যমের সূত্র অনুযায়ী, প্রথমে রাহড়া এলাকা থেকে মজনু গাজী ও কামাল শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কলকাতার নিউটাউনের লস্করপাড়া এলাকা থেকে মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভারতীয় পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, তারা সক্রিয়ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গ্রেপ্তারকৃত কামাল শেখ জানায়, তিনি খুলনার বেদকাশি ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য সচিব ছিলেন।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী ভারতের দিকে অনুপ্রবেশ করেছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে। তাদের অনেকেরই পাসপোর্ট বা বৈধ কাগজপত্র ছিল না; তারা চোরাইপথে ভারতে প্রবেশ করে।
প্রথম দিকে ভারতের বর্তমান সরকার অতীত রাজনৈতিক সম্পর্ক ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে নমনীয়তা দেখালেও, বাংলাদেশি নেতাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় উদ্বেগ বাড়তে থাকে। সম্প্রতি মেঘালয়ে সংঘটিত ধর্ষণ মামলায় সিলেটের চারজন আওয়ামী লীগ নেতার সংশ্লিষ্টতা ভারতজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।
এই প্রেক্ষাপটে ভারত সরকার সাফ জানিয়ে দিয়েছে—আশ্রয়ের দিন শেষ। এখন থেকে আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভারতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক ভারসাম্য, সামাজিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার স্বার্থে এই অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা ভারতে থেকে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে, যা ভারত সরকার কোনোভাবেই সহ্য করবে না।
এই পরিস্থিতিতে ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকেই ইতোমধ্যে আত্মগোপনে চলে গেছেন। তবে ভারত সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে—এখন থেকে ভারতের মাটিতে আর কোনো অনুপ্রবেশকারীর জন্য আশ্রয় নেই।
সূত্র : https://youtu.be/dE-Y9FX3W7A?si=a9ca_6fUzlEyc1IK