৩ টায় শাহবাগ ব্লকেড

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগ দাবিতে আজও রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করবেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) কালবেলাকে এ তথ্য জানান আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ।

ঘোষণা অনুযায়ী, আজ বিকাল তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে যাবেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় জাবি, জবি, ঢাবি, বুয়েট, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, সাত কলেজসহ ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানান মুসাদ্দিক।

এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটায় শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন আন্দোলনকারী তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। পৌনে দুই ঘণ্টা সেখানে অবস্থান শেষে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে শাহবাগ ছাড়েন তারা।

এদিকে, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশনের দুদিনেও কোনো সুরাহা হয়নি। এর মধ্যে চার শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে কুয়েটের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ছাড়া দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকায় দুর্বল হয়ে পড়ছেন আন্দোলনরত ২৭ শিক্ষার্থী ।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকালে অনশন কর্মসূচিতে অসুস্থ হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল বিভাগের ২২ ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী। তাকে কুয়েট মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। এ নিয়ে অনশনে পাঁচ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছেন।

টানা ৪৩ ঘণ্টার অনশনে আন্দোলনরত ২৫ শিক্ষার্থীর সবাই শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। অনেকের শরীরে রক্তচাপ কমে গেছে। কুয়েটের আবাসিক হল ও বাইরের ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে জড়ো হচ্ছেন। সকাল থেকে কুয়েটের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ক্যাম্পাসের ফটকগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

কুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার বলেন, আমরা অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। তাদের অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা অনশন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে। তারপরও আমরা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, কিছুদিন আগে বহিরাগত একজন বাদী হয়ে ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলায় ছাত্রদের ব্যক্তিগত পরিচয়, বিভাগ ও রোল নম্বর যেভাবে নিখুঁত বর্ণনা করা হয়েছে তা কুয়েট প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব না। এরপর কর্তৃপক্ষ ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। এর মধ্যে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীও রয়েছে। উপাচার্যের কাছে বারবার দাবি জানালেও তিনি দাবিগুলো বাস্তবায়ন করেননি।

এদিকে অনশন প্রত্যাহার করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষকরা। ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তারসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহার করে আলোচনায় বসার অনুরোধ জানান। উপ-উপাচার্য অনশনস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে অনড় রয়েছেন।

কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদকে অপসারণের দাবিতে গত সোমবার (২১ এপ্রিল ) বিকেল ৪টা থেকে ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন ৩২ শিক্ষার্থী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *