ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির নেপথ্যে বিপজ্জনক গোয়েন্দা তথ্য

ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষ যখন চতুর্থ দিন পার করছিল, তার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, এই দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে তিনি এটি জানানোর পরই ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের পক্ষ থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

শনিবার (১০ মে) ডোনাল্ড ট্রাম্প তার পোস্টে লিখেন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এক দীর্ঘ রাতের আলোচনার পর আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।

এই ঘোষণার পরই ভারতের স্থানীয় সময় শনিবার বিকাল ৫টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে বলে জানিয়েছে দুই দেশই। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি সন্ধ্যায় বিকেলে এক ব্রিফিংয়ে জানান, শনিবার বিকেল পাঁচটা থেকে স্থল, বিমান ও নৌ বাহিনী পাকিস্তানের দিকে সব ধরনের গুলি চালানো বন্ধ রাখছে।

একই সময় পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসাক দারও টুইট বার্তায় জানান, পাকিস্তান ও ভারত তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।

এই যুদ্ধবিরতি আলোচনায় যুক্তরাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। পাকিস্তানের একটি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এই দাবি করেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কীভাবে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছালো দুই দেশ তার একটি ধারণা পাওয়া যায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এই ঘোষণায়।

তিনি লিখেছেন, তিনি ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স গত ৪৮ ঘণ্টা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফসহ ঊর্ধ্বতন ভারতীয় ও পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের যোগাযোগ রক্ষা করেছেন।

তবে সিএনএনের প্রতিবেদনে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা সিএনএনকে জানিয়েছেন, শুক্রবার ভারত-পাকিস্তানের সংঘাত নিয়ে তারা উদ্বেগজনক গোয়েন্দা তথ্য পান। আর এরপরেই মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট সিদ্ধান্ত নেয় দুই দেশের সংঘাত নিরসনে তাদের ভূমিকা বাড়াতে হবে।

তবে ওই গোয়েন্দা তথ্য নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।

সিএনএন দাবি করেছে, এই গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পর মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অবহিত করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুরে ভ্যান্স সরাসরি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেন।

ভ্যান্স প্রধানমন্ত্রী মোদিকে স্পষ্ট করেন, হোয়াইট হাউসের মতে, এই সংঘাত আরও মারাত্মক রূপ নিতে পারে এবং সপ্তাহান্তে বড় ধরনের সংঘর্ষ হতে পারে।

সিএনএনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মোদির সঙ্গে আলাপের পরেই মার্কো রুবিওসহ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা ভারত-পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে রাতভর যোগাযোগ চালিয়ে যান।

ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেন, মোদির সঙ্গে ভ্যান্সের ফোনালাপ ছিল যুদ্ধবিরতির এই প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *