অবশেষে যে শর্তে ইরানের সঙ্গে চুক্তিতে রাজি হলো যুক্তরাষ্ট্র

মধ্যপ্রাচ্যে অস্ত্রের বিশাল পশরা সাজিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর সেই অস্ত্র বিক্রির লক্ষ্যে অঞ্চলজুড়ে সফর চালিয়ে যাচ্ছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সফরের শুরুতেই বড় সাফল্য পেয়েছেন তিনি—সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে হাজার হাজার কোটি টাকার অস্ত্র চুক্তি সম্পন্ন করেছেন ট্রাম্প প্রশাসন।

এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের প্রতিপক্ষ সিরিয়াকেও দেওয়া হয়েছে সহযোগিতার ইঙ্গিত। তবে এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শত্রু ইরানের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানই নিয়েছেন ট্রাম্প। জানিয়েছেন, ওয়াশিংটনের পরমাণু চুক্তিতে আপত্তি নেই, তবে তেহরানকে এর জন্য “চড়া মূল্য” দিতে হবে।

ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের দ্বিতীয় দিনে সৌদি আরবে গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিল (জিসিসি)-এর এক বিশেষ বৈঠকে উপসাগরীয় অঞ্চলের নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমি ইরানের সঙ্গে চুক্তি করতে চাই। তবে তাদের সন্ত্রাসবাদে পৃষ্ঠপোষকতা, রক্তাক্ত প্রক্সি যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে স্থায়ী এবং যাচাইযোগ্যভাবে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের যে অভিপ্রায় রয়েছে, তা প্রত্যাহার করতে হবে।”

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ট্রাম্প আরও বলেন, “ইরান পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হতে পারবে না। তারা যদি চুক্তি চায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের কঠিন শর্ত মানতে হবে।”

এর আগে রিয়াদে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি বিনিয়োগ ফোরামে কিছুটা নরম সুরে ইরানকে সমঝোতার প্রস্তাব দিলেও ট্রাম্প সতর্ক করেন, “যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত না মানলে ইরানকে কঠিন পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।”

প্রথম প্রেসিডেন্সির সময় ওবামার আমলে করা ইরানের ছয় জাতি পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছিলেন ট্রাম্প। এরপরই ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওয়াশিংটন। কিন্তু তাতে দমে না গিয়ে উল্টো আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠে তেহরান, জোরদার করে তাদের পরমাণু কর্মসূচি।

তবে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় ফিরে ট্রাম্প কিছুটা নমনীয় সুরে জানান, ইরান যদি শুধুমাত্র বেসামরিক পরমাণু কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধ থাকে, তাহলে আলোচনার পথ খোলা রয়েছে। কিন্তু যেকোনো মূল্যে পরমাণু অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করলে তা বরদাস্ত করবে না যুক্তরাষ্ট্র।

ট্রাম্পের এই সফর ও বার্তায় মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক উত্তেজনা নতুন মোড় নিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *