ইউপি চেয়ারম্যানের অ্যাকাউন্টে ১৪ হাজার কোটি টাকার লেনদেন

এক সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৪ হাজার কোটি টাকার বেশি সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে একটি মামলা করেছে দুদক।

অভিযুক্ত মো. লাক মিয়া নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মণদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। চেয়ারম্যান থাকাকালে তার নামে ৪৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এই অংকের লেনদেন হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুদকের মহাপরিচালক মো. আখতার হোসেন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। তিনি আরো জানান, লাক মিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।

মামলার বিবরণী অনুযায়ী, লাক মিয়ার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তিসহ মোট সম্পদের মূল্য ৫৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা, যেখানে তার বৈধ আয় মাত্র ৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। তার ব্যাংক রেকর্ডে দেখা যায়, ১৯৯০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ৭ হাজার ১৮৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা জমা এবং ৭ হাজার ১৮৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

তার স্ত্রী মাহমুদা বেগমের বিরুদ্ধে ১৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক।
তদন্তে দেখা যায়, লাক ইউপি চেয়ারম্যান থাকাকালে মাহমুদার ১৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে মোট ৪৬১ কোটি ১৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২০০৭ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ২৩০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা জমা এবং ২৩০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

এদিকে, লাক মিয়ার ব্যক্তিগত কর্মচারী মো. মহসিন মোল্লার বিরুদ্ধেও তদন্তে নেমেছে দুদক। তার মাসিক বেতন ছিল মাত্র ১২ হাজার টাকা। তা সত্ত্বেও, তার ১৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার ৩২২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার লেনদেনের খবর পাওয়া গেছে।

এনআরবি টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড এবং মেসার্স এনআরবি ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা মালিক হিসেবে পরিচিত মহসিন তার অ্যাকাউন্টে ৫ হাজার ১৬১ কোটি ৪২ লাখ টাকা জমা এবং ৫ হাজার ১৬১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে লায়েক মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে খুন এবং হত্যাচেষ্টাসহ একাধিক অভিযোগ আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *