
চট্টগ্রামের চান্দগাঁও এলাকায় নদী থেকে রাহাত খান নামে এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রাহাত চান্দগাঁও সানোয়ারা ইসলাম বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবে জুনিয়র ক্রিকেট দলের হয়ে খেলত।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে নগরের চান্দগাঁও হামিদচর এলাকার নদী থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ও নিহত কিশোরের পরিবার সূত্র জানায়, সহপাঠীরা বেড়ানোর কথা বলে নদীতে নিয়ে গিয়ে তাকে ফেলে দেয়।
নিহত রাহাতের মা রোজি আক্তার জানান, ‘ছয় বছর বয়স থেকে ক্রিকেট অনুশীলনের জন্য ছেলেকে আউটার স্টেডিয়ামে নিয়ে যেতাম। অনুশীলন শেষ হওয়ার পর আবার তাকে নিয়ে বাসায় ফিরতাম। আমার কষ্ট হতো, ছেলে তা বুঝতে পারত। এ জন্য প্রায়ই বলত, মা আমি যখন বড় ক্রিকেটার হব, তখন বিদেশে খেলতে গেলে তোমাকেও নিয়ে যাব সঙ্গে।’
তিনি আরও জানান ‘রাহাত অলরাউন্ডার ছিল। সে ব্যাটিং-বোলিং দুইটাই ভালো করতো। গত বছর ক্লাবের অনূর্ধ্ব–১১-১২ গ্রুপের অধিনায়ক করা হয় তাকে। সে একজন সম্ভাবনাময় ক্রিকেটারকে হারিয়ে ফেললাম আমরা।’
রোজি আক্তার আরও জানান, ‘ছেলে শুধু বলত, বড় ক্রিকেটার হয়ে আম্মু তোমাকে নিয়ে বিমানে চড়ব। এখন আমাকে কে বিমানে চড়াবে।’
রাহাতের বাবা জানান, দুই মাস আগে স্কুলে বসা নিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে তার ছেলের কথা কাটাকাটি হয়। সেটি মীমাংসাও হয়ে যায়। কিন্তু এই ঘটনার জেরে তার ছেলেকে বুধবার টিফিন ছুটির পর নদীর তীরে নিয়ে যায় সহপাঠীরা। তারাই মেরে নদীতে ফেলে দেয় বলে তিনি দাবি করেন।
রাহাতকে নিয়মিত অনুশীলন করানো কোচ আবদুস সামাদ জানান, ছয় বছর বয়স থেকে মায়ের সঙ্গে ক্রিকেট অনুশীলন করতে আসে রাহাত। ও খুবই মেধাবী ছিল।
এ ব্যাপারে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (উত্তর) জাহাঙ্গীর আলম জানান, এ ঘটনায় নিহত স্কুলছাত্রের চার সহপাঠীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।