পিছনে ফেরার আর কোনো পথ নেই, যে কারণে বললেন ‘প্রেস সচিব’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম তাঁর ফেসবুক টাইমলাইনে দেওয়া একটি দীর্ঘ পোস্টে জানান, তিনি আর পেছনে ফিরতে চান না এবং আগামী দিনের সংগ্রাম থেকে কোনোভাবেই সরে দাঁড়াবেন না।

“পিছনে ফেরার আর কোনো পথ নেই” শিরোনামের এই পোস্টে তিনি তুলে ধরেন গত নয় মাসের অভিজ্ঞতা ও দেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা নিয়ে নিজের উপলব্ধি।

শফিকুল আলম জানান, প্রায় নয় মাস আগে এএফপি থেকে পদত্যাগ করে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় তিনি ভেবেছিলেন, এটি সাময়িক এক পেশাগত মোড়। তাঁর আশা ছিল, মেয়াদ শেষে আবার ফিরে যাবেন সাংবাদিকতায়, গল্প বলার জগতে। কিন্তু এই সময়ের অভিজ্ঞতা তাঁর সেই সরল বিশ্বাসকে ভেঙে দিয়েছে।

তিনি লেখেন, “জুলাই এখনো শেষ হয়নি। এটি কোনো একক সময় নয়, এটি একটি ফ্রন্টলাইন, যেটি প্রতিদিন রক্ষা করতে হয়। জুলাইয়ের বিপক্ষ শক্তিগুলো এখনো সক্রিয়, তারা অপেক্ষা করছে, সুযোগ খুঁজছে। আমাদের আর কোনো ভুল করা চলবে না।”

শফিকুল আলম স্পষ্ট করে বলেন, এ লড়াই এখন আর শুধু পেশাগত নয়, এটি একটি আদর্শিক সংগ্রাম, দুটি ভিন্ন বাংলাদেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব। “একটি বাংলাদেশ চায় গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও প্রগতিশীলতা। আরেকটি আঁকড়ে আছে লুটপাট, বংশগত আধিপত্য আর বিকৃত চেতনার অতীতে,” তিনি বলেন।

তিনি সতর্ক করেন, “তাদের আছে ‘ল্যাসপেন্সার’ নামের দোসর, যারা ইতিহাস বিকৃত করে জুলাইয়ের অর্জনগুলো মুছে ফেলতে চায়। তারা চায় আমরা রাস্তাগুলো ফাঁকা করে দিই, যেন তারা আবার ফিরে আসতে পারে। কিন্তু আমি শিখেছি, এই রাস্তা আর ছেড়ে দেওয়া যাবে না।”

প্রেস সচিব ইতিহাস রক্ষার গুরুত্বও স্মরণ করিয়ে দেন। বিহারিদের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, কিছু বিহারি রাজাকার ছিল, কিন্তু অধিকাংশ নিরীহ ছিল, আজও তারা নিজেদের কথা বলার অধিকার থেকে বঞ্চিত। এই ভুল ইতিহাস যেন আর না হয়।”

পোস্টের শেষাংশে শফিকুল আলম দৃঢ়ভাবে লেখেন, “আমি আর রাস্তাগুলো ছাড়ব না। আমি জুলাইয়ের হত্যাকাণ্ডের কথা বলা থামাব না। আমি বলব সেই দীর্ঘ, অন্ধকার সময়ের কথা, ২০০৯ থেকে আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত, যখন দেশ ছিল ডিজিটাল দাসত্ব, দমন-পীড়ন ও ভয়ের শাসনের নিচে।”

তিনি জানান, এই লড়াই তাঁর কাছে শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি ব্যক্তিগত ও অস্তিত্বের লড়াই। “এই লড়াই আমি হারতে পারি না। হারব না,”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *