সুখবর, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে…

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, প্রাথমিকে পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হয়েছে এবং বৃত্তিও চালু করতে যাচ্ছি। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে

জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘আন্তঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার’ চূড়ান্ত পর্ব শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করছেন উপদেষ্টা।

শনিবার (০৪ মে) লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে লক্ষ্মীপুর জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফের বৃত্তি পরীক্ষা চালু হচ্ছে এ কথা জানিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন,

যৌক্তিক দাবিকে আমরা স্বীকৃতি দেই, মন্ত্রণালয় কার্যকর করার চেষ্টা করে। শূন্যপদ পূরণে চেষ্টা করছি।

অবকাঠামো নির্মাণের বিষয়ে বলেন, পরিকল্পনায় কিছু সমস্যা রয়েছে, তবে অনেক ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে। চোখে পড়ার মতো।

তিনি আরও বলেন, মৌলিক শিক্ষার পাশাপাশি কো-কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস যেমন- বিতর্ক প্রতিযোগিতা, দেয়ালিকা উৎসব, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে।

একসময় বিদ্যালয়ের বাছাই করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে হতো প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা। সেটি বাদ দিয়ে ২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য শুরু হয় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা। তাতে সব শিক্ষার্থীই বৃত্তি পাওয়ার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারত। যদিও পিইসি পরীক্ষা নিয়ে ছিল সমালোচনা। কারণ এর ফলে কোচিং-প্রাইভেটের প্রবণতা ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। এ পরীক্ষার নামে এক ধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং এরপর শিক্ষাক্রমের রূপরেখা বিবেচনায় পিইসি পরীক্ষা আর হয়নি। তখন বৃত্তিও বন্ধ হয়।

কিন্তু ২০২২ সালে একেবারে শেষ বেলায় এসে আকস্মিকভাবে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। যদিও বিশেষজ্ঞরা সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রশাসন তাদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। বৃত্তি পরীক্ষাও ওই বছর। কিন্তু এরপর ওই বৃত্তি পরীক্ষার ফল নিয়েও ব্যাপক ভুলভ্রান্তির ঘটনা ঘটে। সংবাদ সম্মেলন করে বৃত্তি পরীক্ষার ফল ঘোষণার পর ‘কারিগরি ত্রুটির’ কারণ দেখিয়ে ফল স্থগিত করতে হয়েছিল। পরে অবশ্য সংশোধন করে ফল প্রকাশ করা হয়। এসব নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই ২০২৩ সালেও প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। যদিও শেষমেশ বৃত্তি পরীক্ষা থেকে সরে আসে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এখন আবার বৃত্তি চালু পরিকল্পনার কথা জানালেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বলেছেন, তাদের লক্ষ্য হলো ন্যূনতম সাক্ষরতা, শিশুরা মাতৃভাষায় সাবলীলভাবে বলতে পারবে, পড়তে পারবে, লিখতে পারবে। গাণিতিক বিষয়ে সাক্ষরতা অর্জন করবে। যদি শিশুরা সেগুলো পারে তাহলে বলবেন তারা লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।

জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকারের সভাপতিত্বে এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সম্রাট খীসার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাজ্জাদ প্রমুখ।

এর আগে উপদেষ্টা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ‘জেলা প্রশাসন গ্রন্থাগার’ পরিদর্শন করেন।

উপদেষ্টা লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘আন্তঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার’ চূড়ান্ত পর্ব শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *