কেঁপে উঠল পাকিস্তান, তিন বিমানঘাঁটিতে বি’স্ফোরণ

পাকিস্তানের অন্তত তিনটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে পরপর কয়েকটি শক্তিশালী বিস্ফোরণে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান সরকার জরুরি ভিত্তিতে দেশের আকাশসীমা সব বেসামরিক ও বাণিজ্যিক ফ্লাইটের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। খবর এনডিটিভির।

সবচেয়ে বড় বিস্ফোরণটি ঘটেছে রাজধানী ইসলামাবাদের কাছে নূর খান বিমানঘাঁটিতে, যা আগে চকলালা এয়ারবেস নামে পরিচিত ছিল। এটি পাকিস্তান বিমানবাহিনীর অন্যতম সংবেদনশীল একটি ঘাঁটি। এখানে ভিআইপি চলাচল ও গুরুত্বপূর্ণ বিমান অপারেশন পরিচালনা করা হয়। এটি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরেরও কাছাকাছি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে নূর খান ঘাঁটি থেকে আগুন ও ধোঁয়ার কুণ্ডলি উঠতে দেখা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পরপর কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনার পর ঘাঁটির চারপাশে সেনাবাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।

পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শুধু নূর খান নয়, চকওয়াল জেলার মুরিদ বিমানঘাঁটি এবং পাঞ্জাব প্রদেশের ঝাং জেলার রফিকি বিমানঘাঁটিতেও একই ধরনের বিস্ফোরণ হয়েছে।

এই বিস্ফোরণগুলোর ঠিক আগে পাকিস্তান ২৬টি স্থানে ভারতীয় সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালানোর দাবি করে। চলতি মাসের ৮ ও ৯ তারিখে রাতজুড়ে চালানো এই হামলায় ভারতের উত্তরাঞ্চলের লেহ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের স্যার ক্রিক পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলের সামরিক ও বেসামরিক অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়। ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এসব হামলা প্রতিহত করতে তারা বারাক-৮, এস-৪০০, আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ও দেশীয় অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে।

এই প্রেক্ষাপটে ভারত অভিযোগ করেছে, পাকিস্তান হামলার সময় তার আকাশসীমা খোলা রেখেছিল এবং বেসামরিক ফ্লাইটগুলোকে ‘মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করেছে, যা আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের জন্য গুরুতর হুমকি।

এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশি বলেন, পাকিস্তান জানত যে, তাদের ড্রোন হামলার জবাবে ভারতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হবে। তারপরও তারা আন্তর্জাতিক উড়োজাহাজকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে।

এই সমালোচনার মুখে শনিবার সকালে পাকিস্তান একটি নোটাম (নোটিস ফর এয়ারমেন) জারি করে দেশটির আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের এই সামরিক উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তার জন্য ভয়াবহ অশনিসঙ্কেত বহন করছে। পরিস্থিতি অবনতির দিকে গেলে এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়তে পারে গোটা অঞ্চলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *