
পাকিস্তানের লাহোরে গুরুতর আহতাবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে লস্কর-ই-তইবার অন্যতম শীর্ষ নেতা আমির হামজাকে। জানা গেছে, নিজের বাড়িতেই হামলার শিকার হয়েছেন তিনি।
পরে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর নিরাপত্তায় তাকে লাহোরের সেনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে কীভাবে বা কারা এই হামলা চালিয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। খবর আনন্দ বাজার পত্রিকার।
আমির হামজা পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের গুজরানওয়ালা শহরের বাসিন্দা। ২০১২ সালে তাকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি হিসেবে ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তিনি লস্কর প্রধান হাফিজ সাঈদ ও আবদুল রহমান মাক্কির ঘনিষ্ঠ ছিলেন।
হামজা লস্করের পত্রিকা ও প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন, এবং ২০০০ সাল নাগাদ ভারতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে সক্রিয় ছিলেন। ২০০৫ সালের বেঙ্গালুরু হামলাতেও তার নাম জড়িয়েছিল।
এছাড়া ২০১৮ সালে লস্কর ও জামাত-উদ-দায়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির পর ‘জইশ-ই-মানকাফা’ নামে একটি নতুন সংগঠন তৈরি করেন হামজা। তখন অনেকেই মনে করেছিলেন লস্করে ভাঙন ধরেছে,
যদিও পরে জানা যায় এটি ছিল লোক দেখানো কৌশল। তিনদিন আগেই সিন্ধু প্রদেশে গুলিতে নিহত হন লস্করের আরেক শীর্ষ নেতা আবু সাইফুল্লাহ। তার পরেই হামজার ওপর হামলার ঘটনা লস্করের অভ্যন্তরে দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পেহেলগাম হামলাকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দশক ধরে চলা ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সর্বশেষ উত্তেজনা শুরু হয় গত ৭ মে। সেদিন পাকিস্তান এবং আজাদ কাশ্মীরের (এজেকে) বিভিন্ন এলাকায় ভারত বিমান হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৩১ বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে।
পাল্টা জবাবে, পাকিস্তান ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে, যার মধ্যে তিনটি রাফাল। এছাড়া কয়েক ডজন ড্রোনও ধ্বংস করে ইসলামাবাদ।
চারদিনের এই সংঘাতে ভারতের হাতে কমপক্ষে ১১ সেনা এবং ৪০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হন বলে জানা গেছে। পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত ১০ মে দুদেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
এদিকে, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ সম্পর্কে উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা রোববার স্পষ্ট করে বলেছেন, ডিজিএমওদের আলোচনার নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়নি। মূলত মার্কিন মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদ ছাড়াই কার্যকর হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার জল্পনাকে উড়িয়ে দিয়ে এক ভারতীয় কর্মকর্তা বলেন, গত ১২ মে ডিজিএমও-এর সঙ্গে আলোচনায় যেমনটি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার কোনো তারিখ নেই।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনীতিক বলেছেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই।