
ভারতের হামলার পর পাকিস্তানের প্রতি পূর্ণ সংহতি জানিয়েছে ন্যাটোভুক্ত অন্যতম শক্তিশালী রাষ্ট্র তুরস্ক। বুধবার (০৭ মে) তুরস্কের রাষ্ট্রদূত পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক ডারের সঙ্গে সাক্ষাতে এ সমর্থন ব্যক্ত করেন। খবর জিও নিউজের।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আঞ্চলিক উত্তেজনার মধ্যে তুরস্কের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের প্রতি সংহতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন পাকিস্তানে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র শফকত আলী খান জানান, উভয় পক্ষই আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছে। এ ছাড়া দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে তুরস্ক।
তিনি জানান, তুর্কি রাষ্ট্রদূত পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের জন্য ভারতের নিন্দা জানিয়েছেন এবং নিরীহ প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
এদিকে পাকিস্তানে ভারতের হামলাকে কাপুরুষোচিত উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। তিনি বলেছেন, এই হামলার প্রেক্ষিতে ভারতে হামলা করার অধিকার রয়েছে পাকিস্তানের।
বুধবার (০৭ মে) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে শেহবাজ শরিফ বলেছেন, শত্রুপক্ষ উসকানিমূলক আগ্রাসনের অংশ হিসেবে পাকিস্তানের পাঁচটি স্থানে হামলা চালিয়েছে। ভারত যে যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে, তার জবাবে প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে। পাকিস্তান এই হামলাকে ‘স্পষ্ট যুদ্ধ ঘোষণার কার্যক্রম’ বলে মনে করে।
ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর পাকিস্তানের নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুহাম্মদ অসিম মালিককে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
সূত্রের বরাত দিয়ে জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের এই হামলার পর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে পাকিস্তানের নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তাদের আলোচনায় দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানিয়েছেন, পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়াও হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ৩৫ জন। নিহতদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন তিনি।
পাকিস্তানের আইএসপিআরের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর পাকিস্তানের কোটলি, ভাওয়ালপুর, মুরিদকে, বাগ ও মুজাফ্ফরবাদে ‘কাপুরুষোচিত’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে এর বদলা নিতে শুরু করেছে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ দাবি করেছেন, পাকিস্তানের বেশ কয়েক জায়গায় ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে পাকিস্তান বিমানবাহিনী কমপক্ষে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
বুধবার (০৭ মে) প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আসিফ বলেন, পাকিস্তান তাদের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে এবং ভারতীয় বাহিনীর আক্রমণের তীব্র ও নির্ভুল জবাব দিয়েছে। পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য দৃঢ়ভাবে কাজ করছে।
ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের চালানো হামলার প্রতিশোধ হিসেবে দেশটির পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। যার মধ্যে রয়েছে তিনটি রাফায়েল এবং রাশিয়ান তৈরি একটি করে এসইউ-৩০ ও মিগ-২৯।