অবশেষে প্রকাশ্যে এলেন পাকিস্তানের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি!

ভারতের সঙ্গে চরম উত্তেজনার মধ্যেই প্রকাশ্যে এলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মনির। কাশ্মীর ইস্যু ঘিরে সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনার প্রেক্ষাপটে ভারতবিরোধী কড়া বার্তা দিয়ে তিনি জানান দিয়েছেন, পাকিস্তান যেকোনো আগ্রাসনের জবাব আগের চেয়ে আরও শক্তভাবে দেবে। পাকিস্তানের গণমাধ্যম দাবি করেছে, মনিরের এই হুঁশিয়ারি ভারতের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

সাধারণত জনসম্মুখে কম আসেন জেনারেল মনির, তবে এবার তিনি দৃশ্যপটে সরাসরি প্রবেশ করে সামরিক মহড়ায় সেনাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “ভারতের যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সমানতালে অথবা আরও জোরালোভাবে জবাব দেওয়া হবে। বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই।”

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে প্রাণঘাতী হামলার পর পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অভ্যন্তরীণ মতবিরোধ উপেক্ষা করে একযোগে অবস্থান নিয়েছে দেশটির সব মহল। এমনকি কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও ভারতের বিরুদ্ধে অবস্থানে সরকারের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন।

সাম্প্রতিক বক্তব্যে আসিম মনির কাশ্মীরকে পাকিস্তানের “প্রাণসিরা” বলে অভিহিত করেছেন। ইসলামাবাদে প্রবাসী পাকিস্তানিদের সামনে দেওয়া এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, “আমরা আমাদের কাশ্মীরি ভাইদের ভারতের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কখনোই একা ছেড়ে দেব না।”

এই বক্তব্যকে উসকানিমূলক বলে উল্লেখ করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিন্দা জানিয়েছে। তারা কাশ্মীরকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে পুনর্ব্যক্ত করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মনিরের এই অবস্থান কেবল প্রতিক্রিয়াশীল নয়—এটি পাকিস্তানের নীতিতে কঠোর পরিবর্তনের ইঙ্গিত। সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই মনির কঠোর ভারতবিরোধী অবস্থান নিয়ে আসছেন। ২০১৯ সালে কাশ্মীরে আত্মঘাতী হামলার সময় তিনি আইএসআই প্রধান ছিলেন। যদিও সেই বছরই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেন।

পরে ২০২২ সালের নভেম্বরে সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদে আসেন আসিম মনির। তখন থেকেই দেশটির রাজনৈতিক-সামরিক ভারসাম্যে একটি নতুন মাত্রা যোগ হয়।

উল্লেখযোগ্যভাবে, জেনারেল মনির তার বক্তৃতায় ধর্মীয় আবহ বজায় রাখেন এবং দ্বিজাতি তত্ত্ব তুলে ধরে ভারত-পাকিস্তান বিভেদের ধর্মীয় ভিত্তিকে আবারও সামনে নিয়ে আসেন। তাঁর মতে, “হিন্দু ও মুসলিমরা দুটি পৃথক জাতি এবং তাদের আলাদা রাষ্ট্র প্রয়োজন।”

বিশ্বমঞ্চে এই উত্তেজনার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ দুই দেশকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনায় বসেছে। তবে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সাফ জানানো হয়েছে, তারা যেকোনো সন্ত্রাসী হামলার জবাব দিতে প্রস্তুত এবং দোষীদের পৃথিবীর যে প্রান্তেই হোক খুঁজে বের করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *