আল্লাহর রহমতে সাহসী সশস্ত্র বাহিনী উপযুক্ত জবাব দিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বুধবার ভারতের ‘কাপুরুষোচিত হামলা’র নিন্দা জানিয়ে সংহতির আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে বলেছেন, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী পাল্টা আঘাত হেনেছে, যা জাতির দৃঢ় সংকল্প ও যুদ্ধ প্রস্তুতির প্রতিফলন।

জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতের মতো রাতের অন্ধকারে ভারত পাকিস্তানে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিল। তবে আল্লাহর রহমতে এবং জাতির দোয়া ও সমর্থনে সাহসী সশস্ত্র বাহিনী তাদের উপযুক্ত জবাব

দিয়েছে। তবে ওই কাপুরুষোচিত হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, পাকিস্তানের কাছে রাফাল যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলার খবর ছিল এবং

পুরো সংসদ ও ২৪ কোটি মানুষের উচিত তাদের সশস্ত্র বাহিনীর যুদ্ধের প্রস্তুতি ও অনুপ্রবেশকারী যুদ্ধবিমান ধ্বংসের সক্ষমতায় গর্বিত হওয়া। তিনি জাতি ও সংসদের পক্ষ থেকে বিমানবাহিনীর প্রধান জহির আহমেদ বাবর সিধুর সতর্কতা ও অনুপ্রেরণামূলক নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, গত রাতে ভারত ৮০টি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে পাকিস্তানের ছয়টি স্থানে আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করেছিল, যার মধ্যে আজাদ জম্মু ও কাশ্মীর (এজেকে), বাহাওয়ালপুর, শাকরগড় ও সিয়ালকোট অন্তর্ভুক্ত।

তবে পাকিস্তান বিমানবাহিনী পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি রাফাল, যার একটিকে বাথিন্ডায় ভূপাতিত করা হয়। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি ড্রোনও ধ্বংস করা হয়েছে।

শেহবাজ শরিফ বলেন, ‘পাল্টা প্রতিরোধে শত্রুপক্ষ বিভ্রান্ত হয়েছে এবং পাকিস্তানের পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে শক্তি, ক্ষমতা ও মর্যাদা সম্পর্কে সচেতন হয়েছে। এতে তাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যুদ্ধের অভিজ্ঞতায় দক্ষ।’

প্রধানমন্ত্রী জানান, পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানগুলো সম্পূর্ণ প্রস্তুত ছিল এবং তারা ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলোর যোগাযোগব্যবস্থা নষ্ট করে দেয়, যা তাদের শ্রীনগরে ফিরে যেতে বাধ্য করে।

তিনি আরো বলেন, জাতি এই বড় জয়ে অভিনন্দন প্রাপ্য, কারণ সশস্ত্র বাহিনী পেশাদারিত্ব ও দেশপ্রেমের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে, সঠিক পরামর্শ ও পরিকল্পনার ভিত্তিতে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করেছে। আরো ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করা সম্ভব ছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি সব রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে বিরোধী দল পিটিআইয়ের আইন প্রণেতাদের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে পাকিস্তানকে শক্তিশালী ও অজেয় করার প্রচেষ্টাকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বিরোধী নেতাদের সঙ্গে তাদের কক্ষে দেখা করতে প্রস্তুত। কারণ এটি বিশ্বের সামনে পাকিস্তানের ঐক্য প্রদর্শনের মুহূর্ত, যা দেশকে বিশ্বের জাতিগুলোর মধ্যে মহান করে তুলতে পারে।

এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী জানান, বেলুচিস্তানে ট্রেন অপহরণ ঘটনার সঙ্গে ভারতের জড়িত থাকার অকাট্য প্রমাণ পাকিস্তানের হাতে রয়েছে, যেখানে ভারত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর (যেমন বিএলএ ও টিটিপি) সম্পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে। ওই হামলায় বেশ কয়েকজন নিরীহ মানুষ নিহত ও অনেকেই আহত হয়েছে। এসএসজি তাদের পেশাদার দক্ষতায় জিম্মিদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘ভারত এই ঘটনার নিন্দা জানায়নি বরং একে নিয়ে উপহাস করেছে, যা ইতিহাসে ঘৃণ্য ভাষায় লেখা থাকবে।’

প্রধানমন্ত্রী সংসদকে আরো জানান, তিনি পরিস্থিতির অবনতির বিষয়ে বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, কাকুল সফরের সময় তিনি স্পষ্টভাবে বলেছিলেন, পাকিস্তানের ওই ঘটনার সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই এবং এমনকি এটি তদন্তের জন্য একটি আন্তর্জাতিক কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন, যা স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে তদন্ত করবে। কিন্তু ভারত সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।

শেহবাজ সংসদকে সামরিক নেতৃত্বের অবদানের স্বীকৃতি দিতে একটি প্রস্তাব গ্রহণেরও আহ্বান জানান, যারা দেশকে রক্ষা করেছে। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে সংসদ সদস্যরা ভারতের হামলায় নিহত শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তাদের জন্য জান্নাতে উচ্চ মর্যাদার দোয়া করেন।

সূত্র : দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *