
ঢাকার সাভারে বাবা আব্দুস সাত্তারকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে গ্রেপ্তার হওয়া মেয়ে জান্নাতুল জাহান শিফার বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে এসেছে তদন্তে। বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে সামাজিক
যোগাযোগমাধ্যমে “বিচারহীনতার প্রতিশোধ” বলে নিজের কৃতকর্মকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করলেও, পুলিশ বলছে—ঘটনার পেছনে রয়েছে আরো জটিল ও আপত্তিকর বাস্তবতা।
সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিনুর কোভিদ বলেন, “শিফাকে প্রাথমিকভাবে মাদকাসক্ত মনে হয়েছে। যদিও এখনো মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়নি। এছাড়া তার সঙ্গে থাকা দুই নারীর বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে।”
পুলিশ আরও জানায়, শিফা ও তার সাবলেট থাকা দুই সঙ্গীর বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও সমকামিতার অভিযোগ রয়েছে, এবং এসব কর্মকাণ্ডে বাধা দেওয়ায় বাবা আব্দুস সাত্তারকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
জানা গেছে, শিফার মা ছিলেন আব্দুস সাত্তারের তৃতীয় স্ত্রী। পাঁচ বছর বয়সে মাতৃহীন শিফা তার বাবার সাথেই বেড়ে ওঠেন। অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৯ সাল থেকে সাত্তার বিভিন্ন সময়ে মেয়েকে যৌন নির্যাতন করতেন, যা সর্বশেষ ২০২৩ সালে নাটোর আদালতে একটি ধর্ষণ মামলার মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ৭ মে রাতে শিফা বাবাকে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ভাত খাওয়ান। ভোররাতে তিনি ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাত্তারকে হত্যা করেন। এরপর ৯ মে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন শিফা।
সাভার থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপপরিদর্শক বিশ্বকুমার দেবনাথ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আফরোজা সুলতানা সুইটির আদালত শিফার জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিফাকে “নারী অধিকারের প্রতীক” হিসেবে উল্লেখ করে অনেকেই প্রশংসা করেছিলেন। তবে পুলিশের তদন্তে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা ঘটনাটিকে ঘিরে জনমতের চেহারা বদলে দিচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, শিফার বিরুদ্ধে আনা ধর্ষণের অভিযোগের পাশাপাশি তার জীবনযাপন, পরিবেশ ও উদ্দেশ্য নিয়েও বিস্তারিত তদন্ত চলছে। আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=jz18L0ULCA8&ab_channel=DailyJaijaidin