কাঠগড়ায় ফুঁপিয়ে কাঁদলেন তুরিন আফরোজ, সান্ত্বনা দিলেন ‘ইনু’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তুরিন আফরোজকে বুধবার সকালে আদালতে হাজির করা হলে এজলাসে তিনি ফুঁপিয়ে কাঁদেন। এ সময় তাকে সান্ত্বনা দেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নারী পুলিশ সদস্যের সহযোগিতায় তাকে কাঠগড়ায় তোলা হয়। প্রথমে তাকে হাস্যোজ্জ্বল দেখা গেলেও পরে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে থাকলে ইনু ছাড়াও সাবেক আইজিপি শহিদুল হক ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা তানভীর হাসান সৈকত তাকে সান্ত্বনা দেন।

সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে আদালতে আনা হয় তুরিনকে। এ সময় তার পরনে ছিল হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট। শুনানির সময় তার আইনজীবী দাবি করেন, তাকে নির্যাতন করা হয়েছে এবং তিনি কিছু বলতে চান।

বিচারকের অনুমতি নিয়ে তুরিন বলেন, ‘আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কোনো রাজনৈতিক পদে ছিলাম না। আমি শুধু পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছি। আমি অসুস্থ, হাঁটতে পারি না।’

তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘তিনি মিথ্যা কথা বলে আদালতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন।’ এরপর তুরিন বিচারককে নিজের পায়ের নির্যাতনের চিহ্ন দেখান।

শুনানি শেষে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে উত্তরা পশ্চিম থানার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখান ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রহমান। পরে পুলিশ পাহারায় তাকে হাজতখানায় নেওয়া হয়। এ সময়ও তিনি হাস্যোজ্জ্বল ছিলেন, তবে কোনো কথা বলেননি।

এর আগে ৭ এপ্রিল উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৮ এপ্রিল তাকে চারদিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত। রিমান্ড শেষে ১২ এপ্রিল তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান। যুদ্ধাপরাধ মামলায় জামায়াত নেতা গোলাম আযমসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মামলায় তিনি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন।

পরবর্তীতে যুদ্ধাপরাধী মোহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে দেখা করার অভিযোগে তাকে ট্রাইব্যুনাল থেকে অপসারণ করা হয়। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নও চেয়েছিলেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *