বাবা হত্যাকাণ্ড: আগেও সাজিয়েছিল ধ’র্ষণ নাটক, বেরিয়ে আসছে একের পর এক ভয়ানক তথ্য

ধর্ষণের অভিযোগে বাবাকে হত্যা করা জান্নাতুল জাহান শিফার বিরুদ্ধে উঠছে একের পর এক ভয়ানক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। সম্প্রতি সাভারের ভাড়া বাসায় বাবা আব্দুস সাত্তারকে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে কুপিয়ে হত্যা করে মেয়ে শিফা। তার বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলো ধর্ষণ চেষ্টার। তবে পুলিশের তদন্তে এবং প্রতিবেশীদের কথায় উল্টো অভিযোগের তীর এখন শিফার বিরুদ্ধেই।

সম্প্রতি শিফা তার বাবাকে হত্যা করে ৯৯৯ এ কল করে পুলিশকে বলেছিলেন ‘আমি বাবাকে হত্যা করেছি, আপনার লাশ নিয়ে যান।’ এরপরই পুরো দেশজুড়ে শুরু হয় নানা আলোচনা সমালোচনা। শিফা তার বাবা আব্দুস সাত্তার ও দুই বান্ধবীকে নিয়ে সাভারের মজিদপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।

শিফার প্রতিবেশীদের ভাষ্য অনুযায়ী, পাঁচতলায় ওই ফ্ল্যাটে ডাইনিং রুমে থাকতেন সাত্তার, শিফাসহ তার বান্ধবীরা থাকতো অন্য রুমে। দীর্ঘদিন ধরেই মেয়ের উশৃঙ্খল চলাফেরা, মাদক সেবন এবং বান্ধবীদের সঙ্গে তার সমকামীতার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন বাবা। অভিযোগ রয়েছে, এসব অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকতে বললে মেয়ের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা, এমনকি হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছিল আব্দুস সাত্তারের সাথে।

এদিকে সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিনুর কবির গণমাধ্যমকে জানান, প্রাথমিক তদন্তে শিফাকে মাদকাসক্ত মনে হয়েছে। শিফা ছাড়াও তার দুই বান্ধবীর বিরুদ্ধেও মাদকাসক্তের অভিযোগের কথা জানান তিনি। শিফা বরাবরই নিজের মত চলতে চাইতো আর বান্ধবীদের সাথে তার ছিলো সমকামীতার অনৈতিক সম্পর্ক এটি নিয়েই বাবা আব্দুস সাত্তার বাঁধা দিতে গেলে হত্যাকান্ডর শিকার হন তিনি এমনটিই মনে করছে পুলিশ।

এসময় পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, মেয়েটি স্বীকার করেছেন, বাবাকে ২০টি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যা করার কথা। একই সঙ্গে দাবি করেছেন, বাবা তার আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করতেন। তবে, পুলিশ অভিযুক্তের ফোনে এমন কোন ভিডিও‘র প্রমাণ পায়নি।

পুলিশ সূত্রে আরো জানা যায়, এ ঘটনার আগে ২০২৩ সালেও নাটোরের সিংড়া থানায় শিফা তার বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন। সে সময় গ্রেফতার হয়ে জেলও খেটেছেন সাত্তার। তবে ফরেনসিক প্রতিবেদনে ধর্ষণের আলামত না পাওয়ায় আদালত সাত্তারকে জামিন দেন।

প্রতিবেশী ও পুলিশের ভাষ্যমতে বাবাকে হত্যাকারী শিফা একজন মাদকাসক্ত ও সমকামী। তার এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাঁধা দেওয়ায় প্রাণ হারাতে হয়েছে বাবা আব্দুস সাত্তারকে এমনটিই ধারণা করা হচ্ছে। যদিও পুলিশ বলছে এখনো এটির তদন্ত চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *